স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন বাড়ানোর টিপসঃ
আমরা আমাদের আশেপাশে তাকালেই দেখতে পাই কেউ না কেউ ওজন নিয়ে খুবই চিন্তিত। এদের মধ্যে কেউ বেশি ওজন নিয়ে চিন্তিত আবার কেউ কম ওজন নিয়ে।বাড়তি ওজন যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি স্বাভাবিকের তুলনায় কম ওজনও শরীরের জন্য ক্ষতিকর ও চিন্তার বিষয়। আবার অনেক সময় ওজন কমে যাওয়া হতে পারে কোন জটিল রোগের লক্ষন।
স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বাড়ানোর অনেক উপায় রয়েছে। ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবার আগে জানতে হবে কেন ওজন কমে যাচ্ছে। থাইরয়েড সমস্যা, হরমোনের সমস্যা, লিভারের কোন রোগ অথবা হজমে সমস্যার কারনে অনেক সময় ওজন কমে যেতে পারে।তাই আগে ভালো ভাবে ওজন কমার মূল কারণ জানতে হবে।খেয়াল করতে হবে আপনার ওজন ধীরে ধীরে কমছে নাকি দ্রুত কমছে।সেই অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে এবং খাবার খেতে হবে।
শুরুতেই আরও জানতে হবে আপনার বিএমআই কত।একজন ব্যক্তির সাধারণ বিএমআই হলো ১৮.৫ - ২৪.৫ পর্যন্ত। সাধারণত এর নিচে যাদের বিএমআই তাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম। যাদের ওজন কম তারা মুলত বেশি খাবার খেতে পারেন না।কারন তাদের হজমের সমস্যা বেশি থাকে।
যাদের ওজন বিনা কারনেই কমতে থাকে।কোন অসুস্থতার কারনে নয় তারা ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজন এর তুলনায় অনেক গুন বেশি ক্যালোরি গ্রহন করতে হবে। সেইসাথে খাবার যেন স্বাস্থ্যকর হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
যাদের ওজন কম তারাকে যদি বলা হয় অনেক বেশি খাবার খেতে তাহলে তারা তা পারবে না।তাই ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সকাল,দুপুর,রাতে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খাবারের তালিকায় বারতি কিছু খাবার রাখতে হবে।বারতি খাবারগুলো প্রধান খাবারের পাশাপাশি নাস্তা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।শুধু যে বারতি খাবার হিসেবে ফাস্টফুড খেয়েই ওজন বাড়াতে হবে বিষয় টা এমন না।অনেক ভালো স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও ওজন বাড়ানো সম্ভব এতে শরীরের ক্ষতি হয় না।
নিচে ওজন বাড়াতে প্রয়োজনীয় কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার ও নিয়ম দেওয়া হলঃ
তরল ক্যালোরি দ্বারাঃ
আমরা জানি দুধ একটি আদর্শ তরল খাবার।আপনি চাইলে এই দুধ এর সাথে কলা,খেজুর,কাজুবাদাম,অথবা যে কোনো রকম বাদাম ইত্যাদি দিয়ে মিল্কশেক বানিয়ে খেতে পারেন।এতে অনেক পরিমানে ক্যালোরি পাওয়া জাবে।প্রতিদিন সকাল অথবা সন্ধার সময় এধনের খাবার রাখতে পারেন।যাদের ওজন অনেক কম তারা চাইলে দুধ এর সাথে ক্যালোরি প্রোটিন পাউডার মিশিয়ে খেতে পারেন।ভাতের মার এ অনেক বেশি ক্যালোরি।চাইলে আপনি এটিও খেতে পারেন।আবার ১ কাপ চিড়া ভিজিয়ে চিড়ার সাথে কলা,দুধ ইত্যাদি মিশিয়ে খেতে পারবেন।
প্রোটিন দ্বারাঃ
ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রোটিন অন্যতম।মাচ মাংসে রয়েছে অনেক বেশি প্রোটিন।তাই মাছ মাংস খাওয়া বাড়াতে হবে।তার পাশাপাশি ডাল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।কারণ ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন।প্রতিদিন কমপক্ষে ২ টি করে ডিম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
ফ্যাটঃ
আমরা জানি ননী যুক্ত খাবারে যেমন পনির এ ভালো পরিমানে ফ্যাট রয়েছে।বাদাম ফ্যাট এর ভালো উৎস।কাজুবাদাম এ সবচেয়ে বেশি ফ্যাট থাকে।ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কাজুবাদাম বেশ উপকারী।এছাড়া বিভিন্ন তেল জাতীয় খাবারে যেমন অলিভ অয়েল,নারকেল তেল,ঘি,গরুর মাংস,মাছের তেল ইত্যাদি তে ভালো পরিমানে ফ্যাট রয়েছে।আরও আছে এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট ওয়েল ।
শর্করাঃ
শর্করার পরিমান সবচেয়ে বেশি আছে ভাত এ।তার পাশাপাশি আছে আলু।ভাত এবং আলু দুটোই ওজন বাড়াতে বেশ কাজ করে।যেমন পান্তাভাত এ আছে প্রো-বায়োটিকের খুব ভালো উৎস।সকালের নাস্তায় পান্তা ভাত রাখল এ এটি হজমে সহায়তা করে।এছাড়া প্রতিদিনের বিভিন্ন খাবার বা তরকারিতে আলু যোগ করে খেলে বেশ অনেক পরিমানে শর্করার চাহিদা পূরণ হতে পারে।
ফল ও শাকসবজিঃ
যাদের ওজন কম তাদের হজমজনিত সমস্যার কারনে শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।কারন তাদের শরীরে অনেক ভিটামিন ও মিনারেল এর ঘাটতি থাকে।আপনি এমনি এমনি ফল খেতে না চাইলে জুস করেও খেতে পারেন।ফল দিয়ে বিভিন্ন ডেজার্ট বানিয়ে খেতে পারেন।অথবা চাট মস্লার সাথে মাখিয়ে নাশতা হিসেবেও খেতে পারেন।
ব্যায়াম দ্বারাঃ
ব্যায়াম একটি সুস্থ স্বাভাবিক শরীরের জন্য বেশ জরুরী।সঠিক পরিমানে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম করা ভালো।ব্যায়াম খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে ।দিনে অন্তত ২০-৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করতে হবে।
যাদের ওজন একেবারেই কম (বিএমআই ১৮ এর থেকে একটু কম) তারা চাইলে উক্ত নিয়ম গুলি মেনে নিজেদের ওজন বাড়াতে পারেন।তবে যাদের ওজন অনেক কম তারা অবশ্যই ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের কাছে পরামর্শ নিয়ে কাজ করবেন।
আশা করছি আমাদের এই ভিডিওটি আপনাদের উপকারে আসবে।
আরো জানুনঃ
শীতের সময় কলা খাবো নাকি খাবো না ? কলার উপকারিতা।
পাইলস হওয়ার কারণ লক্ষণ ও উপসর্গ সমূহ এবং চিকিৎসা।
সর্দি কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা(Common cold and influenza)
ডেঙ্গুজ্বর কী ? প্রকার,লক্ষণ, এবংচিকিৎসা।
ম্যালেরিয়া কী ? প্রকারভেদ,লক্ষণ, এবং চিকিৎসা।
সাইনোসাইটিস কী?লক্ষণ,করণীয় এবং চিকিৎসা।
নিউমোনিয়া কী?লক্ষণ এবং চিকিৎসা।
চিকনগুনিয়া কি?লক্ষণ,কিভাবে ছড়ায়,প্রতিরোধিএবং চিকিৎসা।
শীর্ষ ১০ ধরনের ক্যানসারের আক্রমন হয় বাংলাদেশে।
NOTE: সকল ঔষধ রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন ।