জেনে নিন বিড়াল পালনের ভালো ও ক্ষতিকর দিক সমূহ

 

জেনে নিন বিড়াল পালনের ভালো ও ক্ষতিকর দিক সমূহ


Any help24



বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই গৃহপালিত কিছু প্রাণী থেকে   থাকে।যেমনঃকুকুর,বিড়াল,হাস,মুরগী,গরু,ছাগল ইত্যাদি।তার মধ্যে বিড়াল অন্যতম।বিড়াল কে অনেক মানুষ অনেক কারনেই পালন করে থাকেন।কেউ কেউ পালন করেন প্রয়োজনে আবার কেউ শখের বশে।বেশিরভাগ মানুষই বিড়াল কে নিজের পরিবারের সদস্য হিসেবে রাখেন।একটি বিড়ালের পিছনে জড়িয়ে থাকে তাদের আবেগ অনুভুতি এবং ভালোবাসা।তবে বাড়িতে বিড়াল পালনের ক্ষেত্রে শুধু আবেগ দিয়ে ভাবলেই চলবে না বরং বিবেগ দিয়ে বুদ্ধিমানের মত সবকিছু বিবেচনা করে নেওয়া উছিত।অর্থাৎ বিড়াল পালনের ভালো ও খারাপ দিক জেনে নেওয়া উচিত।তা নাহলে কিছুদিন পর আপনি বিড়াল পালন নিয়ে নানা সমস্যায় পরতে পারেন।


তাই আসুন জেনে নেই বিড়াল পালনের কিছু ভালো ও খারাপ দিকগুলো।



বিড়াল পালনের কিছু ভালো দিকঃ


১।পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়াল আমাদের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয়।বিড়াল পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুব কমই আছে।বিড়াল কে অনেকে নিজেদের সঙ্গী হিসেবে রেখে থাকে।বিড়ালের সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করে।বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক গুলো অনেক আবেগ অনুভুতিহীন হয়ে উঠেছে।বেশিরভাগ সময়েই মানুষের একা একা সময় কাটাতে হয়।বা আশেপাশে মানুষ থাকলেও তা যন্ত্রণার কারন।এই একাকী জিবন থেকে মুক্তি পেতে অনেকে বিড়াল কে বেছে নেয়।কারন এই সময় নিজের পোষা প্রানীই আমাদের শান্তি দেয়।আমাদের সত্যিকারের বন্ধু হয়ে উঠে।আমাদের মন খারাপের সময় বিড়াল আমাদের পাশে এসে বসে আমাদের স্বান্তনা দিয়ে থাকে। তাদের আদুরে মুখ আমাদের উজ্জীবিত করে তুথে।তাদেরও আমাদের প্রতি আবেগ অনুভুতি এবং ভালবাসা হয়ে যায়।




Any help24





গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়ালের সঙ্গ মানুষের স্বাস্থ্যের যোগ রয়েছে। যেমন- যদি আপনার একটি বিড়াল থাকে তাহলে আপনি অন্যদের চেয়ে কম একাকিত্বে ভুগবেন। বিড়াল খুবই আদুরে প্রাণী। তাদের সঙ্গে বন্ধন নানাভাবে সাহায্য করবে আপনাকে। যারা কোনো সম্পর্কে জড়াননি, একাকিত্ব বোধ করছেন- তারা বিড়াল পুষতে পারেন। সঙ্গী হিসেবে বিড়াল চমৎকার।  



২। বিড়ালের উপস্থিতিতে ঘুম ভালো হয়। মায়োক্লিনিক সেন্টার ফর স্লিপ মেডিসিনের পরামর্শ অনুযায়ী,যাদের ঘুম এ সমস্যা তারা ঘুমের সঙ্গী হিসেবে বিড়ালকে রাখতে পারেন।



৩। ২০০২ সালের এক গবেষণায় জানা গেছে যেসব শিশু বিড়াল পছন্দ করে তাদের এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। 



৪।  বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে যে বিড়াল  ঘরে থাকলে অশুভশক্তি  বা আত্মা সেখানে প্রবেশ করতে পারে না রাশিয়া সহ আরো অন্যান্য দেশের গ্রামাঞ্চলে এই বিশ্বাসটি এখনো প্রচলিত আছে এমনকি আমাদের বাংলাদেশেও।



৫। বিড়াল'কে প্রতিদিন আপনার হাটাতে বা ঘুরতে নিয়ে যাবার প্রয়োজন নেই ওরা বাসা বাড়িতে আরাম আয়েশ এ থাকতেই বেশি পছন্দ করে।



৬। বিড়াল একা থাকতে পারে , যার ফলে আপনি আপনার বিড়াল যদি বাসায় রেখে এবং পর্যাপ্ত খাবার দিয়ে বাহিরে যান সে কোন সমস্যা ছাড়াই থাকতে পারবে।





Any help24



৭। বিড়াল খেলতে খুব পছন্দ করে । যদিও তারা দিনের বেশির ভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয় তবুও যতটুকু সময় জেগে থাকে তারা খেলতে থাকে এবং খেলতে অনেক ভালোবাসে। 



৮। এক গবেষণায় দেখা গেছে বিড়াল কুকুরের তুলনায় কম খাবার খায়। তাছাড়া বিড়াল ঘরের কোনায় থাকা ইঁদুর পোকামাকর এবং বিভিন্ন বিষাক্ত ছোট প্রাণী তারায়।



৯।অটিস্টিক শিশুদের জন্য বিড়াল হতে পারে দারুণ কিছু। বিড়াল কেবল এই ধরণের শিশুদের সঙ্গই দিবে না, তাদের চিকিৎসা ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে। অটিস্টিক শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ও কার্যকরী একটি মাধ্যম হচ্ছে বিড়াল। কারণ বিড়ালটি এই শিশুদের সঙ্গে খেলবে সারাদিন।



বিড়াল পালনের কিছু খারাপ দিকঃ



১।বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে এমন একটি পরজীবী জীবাণু খুঁজে পেয়েছেন যা থেকে মানুষ সিজোফ্রেনিয়া ও বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ভয়ের বিষয় হল বেশিরভাগ বিড়ালের শরীরেই এই ধরনের জীবাণু থাকতে পারে। ফলে নিজেদের পোষা বিড়ালের কাছ থেকেই মানুষের এরকম মারাত্মক রোগ এ আক্রান্ত  হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার টক্সোপ্লাজমা  নামের একটি পরজীবী  রয়েছে যা সকল ধরনের বিড়ালের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে বলে এক গবেষণায় জানা গেছে।তাই সবচেয়ে ভালো হয় নিজ নিজ বিড়াল নিজেদের বাসা বাড়িতেই সব সময় রেখে যাওয়া এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে বিড়াল রাখার ব্যবস্থা করা।




২।বিড়াল যেহেতু খেলা করতে অনেক ভালোবাসে তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দেওয়া দরকার হয়ে থাকে। যদি সে আপনার সাথে সব সময় খেলাধুলা করতে ভালোবাসে তাহলে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় আপনার তার পিছনে ব্যয় করতে হতে পারে। 




৩।লিটার বক্স পরিষ্কার রাখাও একটি ঝামেলার  কাজ। সকল প্রাণীর তুলনায় বিড়াল সবচেয়ে বেশি  পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রাণী হওয়ায় অপরিষ্কার কোন স্থানে থাকতে চায় না। তাই  প্রতিদিন প্রায় বিড়ালের লিটার বক্স পরিষ্কার করতে হয়ে থাকতে পারে। 




৪।যদিও বিড়াল পালা টি কুকুর পালার চেয়ে কম ব্যয়বহুল তবুও এর পিছনে অর্থ ব্যয় করতে হয় এদের ভালো মানের ক্যাটফুড খাওয়াতে হয় যা বেশ অর্থ ব্যয় করে। আবার ভ্যাকসিন ভেটেনারির খরচ তো আছেই ।





Any help24



৫।বিড়াল পালার পুর্বে একটি বিরাট সমস্যার কথা জানা দরকার তা হল বিড়ালের লোম নিয়ে।বিড়ালের লোম একটি বড় ঝামেলার বিষয়।আপনি যদি বাসায় বিড়াল পালন করে থাকেন তবে আপনার বাসার সব জায়গায় বিড়ালের লোম ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে।আপনার বিছানা থেকে শুরু করে আপনার জামা কাপর সবকিছুতেই।আর যদি আপনি পার্শিয়ান ব্রিডের বিড়াল রেখে থাকেন তবে এর লোম আর্ব জামেলা করে থাকবে ।এমনকি আপনার খাবারেও বিড়ালের লোম পাওয়া যাবে।আবার এদের এই লোম পরিষ্কার করাও বেশ ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।




৬।বিড়াল পালার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় আপনার জেনে রাখা ভালো তা হল এটি অনেক বেশি খামছি বা আচর দিয়ে থাকে।যা মানুষ অথবা আপনার ঘরে থাকা আসবাপত্রেও।




বিড়াল পালার ভালো এবং খারাপ উভয় দিকই আমরা জানলাম।তবে অনেক বেশি আদর এবং ভালোবাসা ও যত্নের দ্বারা আমরা বিড়ালকে পোষ মানিয়ে নিজেকের ভাল ও খারাপ সময়ের সঙ্গি করে নিতে পারি।মনে রাখবেন,আমরা এদের যে ভালবাসা দিব তার চেয়ে শতগুন ভালবাসা ফিরে পাব।



আশা করছি আমাদের এই ভিডিওটি আপনাদের উপকারে আসবে। 



আরো জানুনঃ

শীতের সময় কলা খাবো নাকি খাবো না ? কলার উপকারিতা।

পাইলস হওয়ার কারণ লক্ষণ ও উপসর্গ সমূহ এবং চিকিৎসা।

সর্দি কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা(Common cold and influenza)

ডেঙ্গুজ্বর কী ? প্রকার,লক্ষণ, এবংচিকিৎসা।