ডেঙ্গুজ্বর- Dengue Fever
ডেঙ্গুজ্বর কী?
ডেঙ্গুজ্বর ভাইরাস জনিত একটি রোগ। এডিস প্রজাতির মশার কামড়েই সাধারণত ডেঙ্গু ছড়ায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে কামড়ানোর মাধ্যমে এডিস মশার দেহে ডেঙ্গু ভাইরাস ঢোকে । একই মশা আবার কোনো সুস্থ্য ব্যক্তিকে কামড়ালে ডেঙ্গু জীবাণু তার দেহে প্রবেশ করে ।
প্রকারঃ- ডেঙ্গুজ্বর ২ প্রকার।
১। ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুজ্বর
২। হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বর
ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুজ্বর এর লক্ষণ ও উপসর্গঃ-
১. উচ্চমাত্রার জ্বর সাধারণত ৩-৭ দিন থাকে।
২. জ্বর সাধারনত ১০৪/১০৫ ডিগ্রি. ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে।
৩. জ্বর একে বারে চলে গিয়ে প্রনরায় আসতে পারে।ৎ
৪. মাথা,চোখ ও চোখের চারিদিকে ব্যথা হতে পারে।
৫. চোখের মনি লালচে হতে পারে।
৬. ক্লান্তি বোধ হতে পারে।
৭. অবসাধ,উদ্যমহীনতা দেখা দিবে।
৮. মাংসপেশী, হাড় ও মেরুদন্ডে ব্যথা হতে পারে।
৯. বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
১০. খাবার খেতে অনীহা হবে।
আরো পড়ুনঃ ম্যালেরিয়া কী?
হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বর এর লক্ষণ ও উপসর্গঃ-
১. চামড়ার উপর লালচে ফুসকুড়ি পড়বে।
২. নাক, মুখ ও দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
৩. চমড়ার রং বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে।
৪. বমির সাথে রক্ত যেতে পারে।
৫. রক্ত মিশ্রিত কালো পায়খানা হতে পারে।
৬. অনিদ্রা এবং ক্লান্তি বোধ হতে পারে।
৭. প্রচন্ড ব্যথায় অনবরত কান্না করতে পারে।
৮. অতিরিক্ত পানি পিপাসা বোধ হতে পারে।
৯. শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হতে পারে।
১০. রক্তক্ষরণের ফলে শকে বা অজ্ঞান হতে পারে।
চিকিৎসাঃ-
ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় এখনও সুনির্দিষ্ট ঔষধ নেই। তবে সঠিক সময়ে সহায়ক চিকিৎসায় রোগীদের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। ক্লাসিক্যাল ও হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বর উভয় ক্ষেত্রেই উপসর্গ ও লক্ষণ অনুযায়ী করতে হবে।
ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুজ্বঃ-
এই জ্বর ৭ দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়। এই ক্ষেত্রে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা যায়। ব্যথার জন্য Paracetamol গ্রুপের ঔষধ দৈনিক ৩ বার ১ টি করে প্রয়োজন অনুসারে। আর বমির জন্য
Ondansetron গ্রুপের ঔষধ দৈনিক ২ বার ১ টি করে প্রয়োজন অনুসারে ।
প্রয়োজনে খাবার স্যালাইন বা শিরপথে স্যালাইন দিতে হবে এছাড়া প্রচুর পানি পান করতে হবে। তবে সেরে গেলে রোগীর দূর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, বিষন্নতা দেখা দিতে পারে যা পরবর্তীতে সেরে যায়।
হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বরঃ-
এই ক্ষেত্রে রোগীর রক্তের প্লেটিলেট কাউন্ট এবং পিসিভি(প্যাকড সেল ভলিউম) পরীক্ষা করতে হবে। হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বরের রোগীর প্লাটিলেট কাউন্ট কমে যেতে পারে। প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নিচে কমে আসলে রোগীকে শিরা পথে প্লাটিলেট ট্রান্সফিশন করতে হবে। প্রতিদিন ১ বার প্লাটিলেট কাউন্ট পরীক্ষা করতে হবে। আর যদি রোগীর প্রত্যক্ষ রক্ত ক্ষরণ থাকে। যেমনঃ রক্ত মিশ্রিত কালো রং এর পায়খানা, রক্ত বমি হওয়া, নাক দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হওয়া ইত্যাদি । তাহলে এই রোগীকে রক্ত দেয়া যেতে পারে। সঠিক সময়ে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা নিলে খুব সহজেই এর জটিলতা গুলো এড়ানো যায় ও রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
# মনে রাখতে হবে ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর ক্ষেত্রে ব্যথার জন্য কোন অবস্থাতেই Aspirin অথবা Paracetamol+Coffain জাতীয় ঔষধ দেয়া যাবে না। কারণ এতে রক্তক্ষরণের প্রবণতা বেড়ে যায়।
ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধঃ-
১. ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে কামড়ানো যে কোনো মশার কামড় হতেও ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। সুতরাং রোগীকে অবশ্যই সার্বক্ষণ মশারীর মধ্যে রাখতে হবে।
২. এডিস মশা সাধারনত ভোরে এবং সন্ধ্যা নামার আগ মূহুর্তে কামড়ায়। তাই রাতে এমনকি দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করতে হবে।
৩. ঘর-বাড়ী ও তার আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৪. বাস স্থানে ফুলের টব, ডাবের খোসা, মুখ খোলা পানির ট্যাংক ইত্যাদিতে পানি জমতে দেয়া যাবে না।
আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।
ম্যালেরিয়া কী ? প্রকারভেদ,লক্ষণ, এবং চিকিৎসা।
সাইনোসাইটিস কী?লক্ষণ,করণীয় এবং চিকিৎসা।
নিউমোনিয়া কী?লক্ষণ এবং চিকিৎসা।
চিকনগুনিয়া কি?লক্ষণ,কিভাবে ছড়ায়,প্রতিরোধিএবং চিকিৎসা।
শীর্ষ ১০ ধরনের ক্যানসারের আক্রমন হয় বাংলাদেশে।
হুপিং কাশি/ Pertussis কী,লক্ষণ,জটিলতা, এবং চিকিৎসা।
মাম্প্স কী,লক্ষণ / উপসর্গ,মাম্প্স হলে কী কী করণীয়/ ( হোম রেমেডি) এবং চিকিৎসা।
Tonsillitis/টনসিলাইটিস কি? কারণ, লক্ষণ,কী খাওয়া যাবে/যাবে না এবং চিকিৎসা।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার চতুর্থ ডোজ এবং করোনা মহামারির আতঙ্ক কমে গেলেও সংক্রমণ থেমে নেই।
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাওয়ার পর যে কাজগুলো করবেন না ?
দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।
পিরিয়ড চলাকালিন মেয়েরা যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন ।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষতি কী । এবং জেনে নিন ঘুম না হলে কী করবেন ?
রাতকানা রোগ কী ? রাতকানা রোগ কেন হয় ? এবং এর প্রতিকার ।
রক্তস্বল্পতা কি ? এর কারণ , লক্ষণ, চিহ্ন, চিকিৎসা এবং উপদেশ ?
কান পাকা রোগ কেন হয় এর কারণ,লক্ষণ,চিহ্ন এবং চিকিৎসা
কনজাংটিভাইটিস বা ( চোখ উঠা ) কি ? এর কারণ , লক্ষণ/চিহ্ন , চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ ।
NOTE: সকল ঔষধ রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন ।