১-২ বছর বয়সী শিশুদের কি খাওয়াবেন এবং কি খাওয়ানে উচিৎ নয়?
১-২ বছর বয়সী শিশুদের খাবার নিয়ে মায়েরা যে প্রশ্নগুলো করেন
এ বয়সে কি কি খাওয়ানো যেতে পারে?
বড়দের খাবার কি খাওয়ানো যাবে?
দিনে কয়বার খাওয়াতে হবে?
পরিমাণ কতোটুকু হবে?
রুটিনটা কেমন হবে?
১-২ বছর বয়সী শিশুকে কি খাওয়াবেন?
এ বয়সী শিশুকে দিনে কমপক্ষে পাঁচ বার মূল খাবার খাওয়াতে হবে।
এছাড়াও শিশু যতোবার দুধ খেতে চাইবে ততোবার দুধ খাওয়ানো যাবে।
এ বয়সে শিশুদের জন্য আলাদা খাবার রান্না না করে পারিবারিক খাবার খাওয়ালে খাবারে বৈচিত্র্য থাকবে।
তবে বিশেষ কিছু খাবার খাওয়ানো হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন- ডিম, বাদাম, ফল, সবজি, মাছ, মাংস, বিভিন্ন রকম ডাল। এসকল খাবার তার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
সকালের খাবার
সিরিয়াল/ সুজি রান্না / ভেজানো নরম রুটি/ ভাত ও সবজি খাওয়াতে হবে।
মাঝে মাঝে পানি এবং দুধ চলবে। সর্বচ্চো দু ঘণ্টা পর ডিম খাওয়ানো যেতে পারে।
বেলা ১১-১২ টার খাবার
সকাল ১১-১২ টার মধ্যে তাকে একটা বা দুটো ফল দেওয়া যেতে পারে। যেমন কলা, পেঁপে, সফেদা, বেদানার রস, খেজুর, খেজুর রস করে ইত্যাদি।
দুপুরের খাবার
দুপুরে গোসলের পর ভাত/ খিচুড়ি, সবজি, ডাল, মাছ, মাংস অর্থাৎ ঘরে যেটা রান্না হয়েছে সেটাই খাওয়ান।
বিকাল ও সন্ধ্যার খাবার
বিকেলে ঘুম থেকে ওঠার পর নাশতায় সুজির হালুয়া, গাজরের হালুয়া, সিরিয়াল খাওয়াতে পারেন। হালুয়ার সাথে বাদামের গুড়ো মিশিয়ে দিলে তার পুষ্টি নিশ্চিত হবে।
সন্ধ্যায় দুধ খাবে।
রাতের খাবার
রাতে পরিবারের সাথে বসে ভাত তরকারী অথবা নরম করে রুটি খাবে।
অন্যান্য যে বিষয়গুলি খেয়াল রাখবেন
এ বয়সী শিশুদের রাতে ঘুমের মাঝে ক্ষুধা লাগে। তখন তারা কান্না করে বা ঘুমের মধ্যে অস্বস্তি প্রকাশ করে। তখন উঠিয়ে দুধ খায়িয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে।
এ বয়সের শিশু দুধের তৈরি মিষ্টি খাবার খেতে পছন্দ করে। তাকে এসব খাবার দেওয়া যাবে। এ বয়সে ছানার তৈরি মিষ্টি মাঝে মাঝে খাওয়ালে তার বুদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।
তার হাতে মাঝে মাঝে ফল বা অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার দেওয়া যেতে পারে। এতে করে সে নিজে খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে পারবে এবং তার সঠিক মানসিক বিকাশ ঘটবে।
এ বয়সে শিশুকে বড়দের সাথে খেতে ডাকলে তারা সামাজিক হয়ে উঠবে। খাওয়ার প্রতি অনীহা থাকবেনা।
১-২ বছর বয়সী শিশুদের কি খাওয়ানে উচিৎ নয়?
লক্ষ্য করুন-
১. ফর্মুলা মিল্ক অবশ্যই রান্না করে খাওয়ানো যাবে না।
২. কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলো আয়রন জাতীয় খাবার যেমন আনার বা কাঁচা কলা খাওয়ানো যাবে না।
৩. বাইরের খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন।
৪. যদি গরুর দুধে এ্যালার্জি না থাকে তবে খাওয়ানো যেতে পারে কিন্তু পাতলা করে।
৫. কৌটাজাত ফুলক্রীম মিল্ক খাওয়ানো যাবে না।
৬. তিন বছর বয়সের আগে আঙ্গুর খাওয়ানো যাবে না।
৭. সে যেহেতু নতুন অনেক খাবারের সাথে পরিচিত হচ্ছে, খেয়াল রাখতে হবে কোনো খাবারে তার পেটে সমস্যা দেখা দেয় কিনা। তেমন হলে সেই খাবারটি অনতিবিলম্বে বন্ধ করে দিতে হবে।
৮. এমন কোনো খাবার হাতে দেওয়া যাবে না যেটা খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায়। শিশুদের গলায় খাবার আটকে যাওয়াটা ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ।
৯. অতিরিক্ত খাওয়াবেন না।
১০. দিনে দেশী প্রজাতির ফল বা ডিম, দুধ, কলা, মাংস সব একবারে একদিনে খাওয়াবেন না।
১১. যেহেতু নতুন নতুন খাবার খাচ্ছে, পেটে গ্যাস তৈরি হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখবেন। পেটে গ্যাস থাকা অবস্থায় বেশী খাওয়াদাওয়া ক্ষতিকর। আগে গ্যাস নির্মূল করতে হবে।
১২. আপনার শিশুর হাতে খাবার তুলে দেবার অবশ্যই আগে তার হাত পরিষ্কার করে নেবেন এবং পরিষ্কার খাবার দেবেন। ।
১৩. এ বয়সে শিশুরা বড়দের অনুকরণ করে, তাই খেয়াল রাখতে হবে তারা এমন কিছু খেয়ে ফেলছে কিনা যা তার জন্য ক্ষতিকর। যে খাবারটি তার জন্য ক্ষতিকর সেটা তাকে আড়াল করে খেতে হবে।
১৪. এ বয়সী শিশুর সামনে ওষুধ খেলে অবশ্যই সে ওষুধ শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে।