রোদ একটি শিশুর জন্য প্রচণ্ড রকমভাবে জরুরি
রোদটা একটি শিশুর জন্য প্রচণ্ড রকমভাবে জরুরি
একটি বাচ্চা শিশুটি জন্মের পর প্রাথমিক যে সমস্যাটি হয় সেটি হচ্ছে জন্ডিস এটি প্রায় শতকরা ৬০ শতাংশ শিশুর ভেতরেই হয়ে থাকে।এটি তখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরক কিছু না যতক্ষণ পর্যন্ত না তার সীমা অতিক্রম করে ফেলে। আর যখন শিশুটির জন্ডিস দেখা দেয় তখন প্রাথমিকভাবে যে চিকিৎসাটি দেওয়া হয় সেটি হচ্ছে রৌদ্র সকালের যে মিষ্টী রোদ ওঠে সেই রোদ্রে একটু করে ধরা। এই সময়কার মিষ্টি রোদ বাচ্চাদের জন্ডিস দূর করার জন্য খুবই উল্লেখযোগ্য বা উপকারী একটি উপাদান ।
এই রোদটিতে জন্ডিস কমাতে সহযোগিতা করে। এটি শরীর দিতে হবে তা কিন্তু নয় গাছের ভিতর পাওয়া যায় সেই রোদের যে আলো ক্রস নিয়ে আছে সেই রসের মাধ্যমেও এই জন্ডিস থাকলে সেটি দূর করা সম্ভব। এটি ক্ষতিকর কিছু নয়, যদি একটি সীমা অতিক্রম না করে। যখনই একটু জন্ডিস দেখবে, তখনই রোদে রাখবে। মিষ্টি রোদটা খুব ভালো। আর কাঁচের ভেতর দিয়ে যে রোদ আসে, এটাও কিন্তু জন্ডিসটা কমায়। যত বেশি জন্ডিস, তত বেশি সময় ধরে সে রাখবে। এক ঘণ্টা /দুই ঘণ্টা খুব জরুরি। সকালের দিকে। আটটা থেকে ১০টা এই রোদটা ভালো। দুপুরের দিকে না হলে ভালো।
সূর্যের আলোতে রয়েছে ভিটামিন ডি। কাঁচের ভেতর দিয়ে যে সূর্যের আলোটা ঢোকে, তখন কিন্তু ভিটামিন ডি প্রস্তুত করার জন্য যে রে সেটি আর ঢুকতে পারে না। তাই বাইরের রোদ দরকার।
শিশুরা হলো বাড়ন্ত। আমরা যারা বড় হয়ে গেছি, আমরা কিন্তু আর লম্বা হব না। তবে শিশুরা লম্বা হবে। লম্বা হলে তাদের হাড় লম্বা হবে। হাড়ের বৃদ্ধির জন্য দরকার হলো ভিটামিন ডি। এটা খুবই জরুরি। মা-বাবার মনে রাখতে হবে, যেসব শিশু বাইরে রোদ পাচ্ছে না, বিভিন্ন কারণে যেতে পারছে না, তাদের অবশ্যই যেন ভিটামিন ডি খাওয়ায়। উন্নত বিশ্বে কিন্তু প্রতিনিয়ত ভিটামিন ডি খাওয়ানো হয়।
আমাদের দেশের মা-বাবা মনে করে, রোদ তো আছেই। তবে রোদ যে কেবল শিশুর মুখে লাগছে, সারা শরীরে লাগছে না, সেটি খেয়াল করে না। আসলে শিশুটির কিন্তু রোদ লাগছে না।
শিশুকে কতক্ষণ রোদ লাগাবেন
শিশুর ত্বকে সূর্যালোকের ‘আলট্রাভায়োলেট বি (২৯০-৩২০ ন্যানোমিটার ওয়েভ লেংথ) রে’-এর বিক্রিয়ায় শরীরের ক্যালসিয়াম মাত্রা বজায় রাখা, দেহ অস্থি কাঠামো অটুট, রোগ প্রতিরোধ শক্তির উজ্জীবন, স্নায়ুতন্ত্র, এন্ডোক্রাইন গ্রন্থি, ক্যানসার ও নানা রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ভিটামিন-ডি উৎপন্ন হয়।
এই রশ্মি যেমন এ ভিটামিনের জোগানদার তেমনি অতিরিক্ত সময় ধরে সরাসরি রোদে রাখার কারণে ত্বকের বার্ন, হিট স্ট্রোক, বমি, ডারমাটাইটিস, ফোসকা পরবর্তী ত্বকের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকির মতো ক্ষতিকর দিকগুলোও উপেক্ষনীয় নয়।
সুতরাং সব বিষয় বিবেচনা করে শিশু বয়সে রোদ লাগানো নিয়ে পরামর্শ গুলো হলঃ
১. নবজাতক শিশুকে দৈনিক ২ মিনিট মিষ্টি রোদ, সরাসরি না, যেমন বারান্দার রোদ কণার ছোঁয়া দেওয়া।
২. ছয় মাসের কম বয়সি শিশু যেন সরাসরি পড়ে এ রকম সূর্যালোকের সংস্পর্শে না আসে।
৩. স্কুল বয়সি শিশুকে সপ্তাহে ২-৩ দিন, সকাল ১০টা হতে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দৈনিক ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য রোদ লাগানো হলে শিশুর প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন-ডি তৈরি হবে, আবার শরীরের ক্ষতিও হবে না।